আমাদের গায়ে হাত দেবেন না । কাঁদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ করেন
![]() |
আমাদের গায়ে হাত দেবেন না |
দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় ঐক্যের আহ্বান সেনাপ্রধানের
দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হতে পারে, যদি অভ্যন্তরীণ বিভেদ ও সংঘাত চলতে থাকে—এমন সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান। একই সঙ্গে সেনাবাহিনীর প্রতি সমর্থন ও সহযোগিতার আহ্বান জানান তিনি।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর রাওয়া কনভেনশন হলে আয়োজিত ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে বিশেষ অনুষ্ঠানে সেনাপ্রধান এ কথা বলেন।
দেশ ও জাতির স্বার্থে ঐক্যের প্রয়োজন
সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমি আপনাদের সতর্ক করে দিচ্ছি—যদি আমরা অভ্যন্তরীণ বিরোধে লিপ্ত থাকি, কাদা ছোড়াছুড়ি করি কিংবা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ি, তাহলে দেশের স্বাধীনতা হুমকির মুখে পড়বে। আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত জাতির উন্নয়ন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার একমাত্র আকাঙ্ক্ষা দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করা। আমরা যদি একসঙ্গে কাজ করতে না পারি, তাহলে অপরাধীদের জন্য এটি সুযোগ তৈরি করবে, যা দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করবে।’
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা
সেনাপ্রধান পুলিশের কার্যকারিতা নিয়ে বলেন, ‘পুলিশ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে। তাদের অনেক সদস্য মামলা ও তদন্তের আওতায় রয়েছেন। এতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যকারিতা কমে যাচ্ছে। তবে আমাদের উচিত বাহিনীগুলোর কার্যকারিতা নষ্ট না করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় বিচার নিশ্চিত করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব শুধু সেনাবাহিনীর নয়। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি, ডিজিএফআই, এনএসআই, আনসার-ভিডিপি সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করলে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে। মাত্র ৩০ হাজার সেনাসদস্য দিয়ে দেশের বিশাল নিরাপত্তা শূন্যতা পূরণ করা সম্ভব নয়।’
নির্বাচন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সেনাপ্রধান বলেন, ‘দেশে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার করছে। আমরা চাই, এ প্রক্রিয়াটি সফল হোক এবং দেশ একটি স্থিতিশীল ও সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশের দিকে এগিয়ে যাক।’
জাতীয় ঐক্যের আহ্বান
দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে সেনাপ্রধান বলেন, ‘আমাদের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দেশের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সংঘাতের পরিবর্তে পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে আমরা দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে নিতে পারি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই না হানাহানি, মারামারি কিংবা বিভেদ। আমরা চাই শান্তি ও স্থিতিশীলতা। সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াবেন না, বরং আমাদের উপদেশ দিন, উৎসাহিত করুন। আমরা একসঙ্গে দেশকে এগিয়ে নিতে চাই।’
সেনাপ্রধানের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট যে, দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় ঐক্য অপরিহার্য। বিভেদ ও সংঘাত পরিহার করে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই একটি উন্নত ও সুশৃঙ্খল দেশ গঠন সম্ভব।
No comments